lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
Last Updated 2025-02-24T07:41:31Z
আইন ও অপরাধ

বড় ভাইকে হত্যা করতে ছোট দুই ভাইয়ের সন্ত্রাসী ভাড়া: স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও জামাতাকে কুপিয়ে জখম

Advertisement


 

আমতলী (বরগুনা) সংবাদদাতা:

বড় ভাই মফিজ উদ্দিন হাওলাদারকে হত্যা করতে ছোট দুই ভাই মিলন হাওলাদার,আব্দুর রব হাওলাদার বহিরাগত সন্ত্রাসী ভাড়া আনেন। ওই সন্ত্রাসীদের সহযোগীতায় ছোট দুই ভাই বড় ভাই, তার স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও জামাতাকে কুপিয়ে জখম করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত মফিজ উদ্দিন হাওলাদার সোমবার এমন অভিযোগ করেছেন। ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার উত্তর তক্তাবুনিয়া গ্রামে বুধবার দুপুরে। 

জানাগেছে, গত বছর উপজেলার উত্তর তক্তাবুনিয়া গ্রামের মফিজ উদ্দিন হাওলাদার তার পুকুর সেচ দেয়। ওই পুকুরের দুই লক্ষাধীক টাকার মাছ ছোট ভাই মিলন হাওলাদারের পুকুরে রাখেন তিনি। গত এক বছর ধরে ওই মাছ ছোট ভাইয়ের পুকুরে চাষবাদ করেন। এ বছর জানুয়ারী মাসে বড় ভাই ওই মাছ শিকারের চেষ্টা করেন। এ সময় ছোট দুই ভাই মিলন ও আব্দুর রব এতে বাঁধা দেয়। এ নিয়ে তিন ভাইয়ের মধ্যে দ্বন্ধ হয়। এ মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে ছোট দুই ভাই বড় ভাইকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বলে অভিযোগ করেন বড় ভাই মফিজ উদ্দিন হাওলাদার। বুধবার দুপুরে ওই বাড়ীতে কেউ ছিল না। এ সুযোগে ছোট দুই ভাই আব্দুর রব হাওলাদার ও মিলন হাওলাদার ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা বড় ভাই মফিজ উদ্দিন হাওলাদারকে হত্যা করতে তার ওপর হামলা চালায়। তাকে রক্ষায় তার স্ত্রী হেলেনা বেগম এগিয়ে এলে তাকেও কুপিয়ে জখম করে। খবর পেয়ে তার ছেলে রিয়াজ হাওলাদার বাড়ীতে আসলে তাকেও কুপিয়ে জখম করে। তার জামাতা শিবলী শরীফ ও তার মেয়ে মাহফুজা বেগম ঘটনার পরপর শ্বশুর বাড়ীতে আসলে তাদেরও সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে জখম করেছে। পাঁচজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে সন্ত্রাসীরা বীর দর্পে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ রাসেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান গুরুতর আহত শিবলী শরীফ (৪৩), মাহফুজা (২৫) ও রিয়াজ হাওলাদারকে (৩৬) উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেছেন। তারা ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

মফিজ উদ্দিন হাওলাদার বলেন, গত বছর আমার পুুকুরের দুই লক্ষাধীক টাকার মাছ ছোট ভাই মিলনের পুকুরে ফেলে রাখি। গত এক বছর ধরে ওই মাছ চাষাবাদ করে আসছি। গত জানুয়ারী মাসে মাছ শিকার করতে গেলে দুই ভাই আমাকে বাঁধা দেয়। এ নিয়ে আমার সঙ্গে তাদের দ্বন্ধ হয়। এ ঘটনার জের ধরে দুই ভাই আমাকে হত্যা করতে বহিরাগত সন্ত্রাসী ভাড়া আনেন। বুধবার আমাকে বাড়ীতে একা পেয়ে সন্ত্রাসীসহ আমার দুই ভাই আমাকে মারধর করেন। আমি আমার ঘরে আশ্রয় নেই। পরে আমার স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম করে। আমাকে রক্ষায় আমার ছেলে, মেয়ে ও জামাতা এগিয়ে আসলে তাদেরকে কুপিয়ে জখম করেছে। দ্রæত ওই সন্ত্রাসীসহ আশ্রয়দাতা আব্দুর রব ও মিলন হাওলাদারের শাস্তি দাবী করেছেন তিনি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, ডাকাডাকির শব্দ শুনে এসে দেখি অপরিচিত কয়েকজন লোক মফিজ হাওলাদার ও তার স্ত্রীকে মারধর করছেন। খবর পেয়ে তাদের রক্ষায় ছেলে রিয়াজ হাওলাদার ও মেয়ে মাহফুজা ও জামাতা শিবলী শরীফ এগিয়ে তাদেরকেও কুপিয়ে জখম করেছে। 

আহত শিবলী শরীফ বলেন, ওরশ থেকে শ্বশুর বাড়ী গিয়ে দেখতে পাই শ্বশুর ও শ্বাশুড়ীকে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সহযোগীতায় আব্দুর রব ও মিলন হাওলাদার কোপাচ্ছেন। তাদের রক্ষায় আমি ও আমার স্ত্রী এগিয়ে গেলে আমাদেরকে কুপিয়ে জখম করেছে। আমরা এগিয়ে না এলে আমার শ্বশুরকে সন্ত্রাসীরা হত্যা করে ফেলতো। 

ছোট ভাই মিলন হাওলাদার মারধরের স্বীকার করে বলেন, বড় ভাই মফিজ উদ্দিনের মাছ আমার পুকুরে গত একবছর ধরে চাষাবাদ করছেন। এনিয়ে দ্বন্ধ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমার বড় ভাই আমাকে মারধর করেছে।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, গুরুতর আহত তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

আমতলী থানার ওসি মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।