Advertisement
হাজী জাহিদ, নরসিংদী:
নরসিংদীর রায়পুরায় সুস্মিতা আক্তার (১৯) নামে এক গৃহবধূকে মারধরের পর শ্বাসরুদ্ধকরে হত্যার অভিযোগ স্বামী জুবায়ের মিয়ার বিরুদ্ধে স্বামীর দাবি আমি নির্দোষ সে নিজে থেকে তার মার সাথে অভিমান করে আত্মহত্যা করেছে গত ২৯ অক্টোবর ২০২৪ পৌর শহরের শ্রীরামপুর আল-সাবাহ্ হাসপাতালের পিছনে থাকা একটি ভাড়াবাসা বাড়িতে ।
নিহতের স্বামী জুবায়ের (২৬) বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের আজিজুল হক ওরফে আফজাল মিস্ত্রি’র ছেলে ও ডিজিএফআই হেড কোয়াটারের চাকুরি করেন বলে জানা গেছে। নিহত সুস্মিতা সায়দাবাদ গ্রামের ইব্রাহিম মিয়ার মেয়ে। সুস্মিতার বাবা শ্রীরামপুর কামারবাড়ি মোড়ে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। ঘটনার কিছুদিন আগে সেখানে সুস্মিতা বাপের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলো।
নিহতের স্বজনরা জানান, প্রায় দুই বছর আগে উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের আজিজুল হক ওরফে আফজাল মিস্ত্রি’র ছেলে মো. জুবায়ের মিয়া’র সাথে সায়দাবাদ গ্রামের ইব্রাহিম মিয়ার মেয়ে সুস্মিতা’র বিয়ে হয়। দুই বছর বিবাহিত জীবনে তাদের আট মাসের একটি কন্যা শিশু রয়েছে।
বাপের বাড়িতে খাওয়া শেষে সুস্মিতার মার সাথে কথা কাটাকাটি হয় একপর্যায়ে অভিমান করে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন। ওই সময় স্বামী জুবায়ের পাশের ঘরে মোবাইল দেখছিলেন বলে জুবায়ের জানান। এক পর্যায়ে স্বামী এসে ঘরের দরজা বন্ধ থাকলে খুলতে অনেক ডাকাডাকি করেন।
জুবায়ের আরও জানান আমি ঢাকাতে একটি ফ্লাট বাসা পেয়েছি সেখানে সুস্মিতাকে নিয়ে আমরা থাকতে চেয়েছিলাম কিন্তু তার মা মেয়েকে নিজের কাছে রাখতে চেয়েছিলেন, আমার শ্বশুর ইব্রাহীম চাকরির সুবাদে দেশের বাহিরে থাকেন, আমার শাশুড়ি আমার ছোট শালীকে নিয়ে শ্রীরামপুর একা বাসাতে থাকেন।
এজন্য আমাকে প্রায়ই বলতো আমার স্ত্রী যাতে আমার শাশুড়ির সাথে থাকে মাসে মাসে আমি যেন খরচ পাঠিয়ে দিই। আমি চাচ্ছিলাম আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় কোয়ার্টারে থাকার জন্য এ নিয়েই আমার শাশুড়ির সাথে আমার স্ত্রীর সুস্মিতার প্রায় সময় ঝগড়া বিবাদ হতো। সুস্মিতা আত্মহত্যার দিন সকালে এ নিয়ে তার মার সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সে অভিমান করে আত্মহত্যা করে আমি নির্দোষ আমাকে ফাঁসাতে এক এক সময় একক মিথ্যা গল্প তৈরি করছে।
ডাকাডাকির পর দরজা না খুললে পাশের ফ্ল্যাটের লোকজনসহ সকলে দরজা ভাঙ্গার চেষ্টা করেন। অনেক চেষ্টার পর দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করলে সুস্মিতাকে ফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্বামী দ্রুত নামিয়ে প্রথমে আল সাবাহ পরবর্তীতে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার সত্যতা জানতে মামলার বাদী সুমি বেগমের বাড়িতে গেলে তিনি একেক সময় একেক কথা বলেন এবং গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে বলেন সুস্মিতার স্বামী দৌড়ে পালিয়েছেন আবার কখনো বলেন দরজা ভেঙে ভিতরে তিনি ঢুকেছেন, সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে বলেন আমি সন্দেহ করতেছি সে মেরে ঝুলিয়ে রেখেছে কিন্তু আমি দেখিনি।
এ ব্যাপারে নিহতের নানা সাবেক ইউপি সদস্য দানিস জানান আমার নাতি সুস্মিতাকে হত্যা করতে আমরা দেখিনি শুনেছি, ফোনে খবর পেয়ে সায়দাবাদ থেকে আমরা সরাসরি হাসপাতালে গিয়ে জানতে পেরেছি সে আত্মহত্যা করেছে ।
এ বিষয়ে রায়পুরা থানার (তদন্ত ওসি) প্রবীর কুমার ঘোষ জানান মামলা তদন্ত চলছে মামলা তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এর আগে আমি কোন কিছুই বলতে পারব না।