lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
মঙ্গলবার, ৪ মার্চ, ২০২৫
Last Updated 2025-03-04T12:26:18Z
আইন ও অপরাধ

পাথরঘাটায় ছাত্রীকে শীলতাহানির অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে

Advertisement


 

বরগুনা প্রতিনিধি:

 বরগুনার পাথরঘাটায় চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ উঠছে  শিক্ষকের বিরুদ্ধে। উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ৩৮ নং ছোনবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এমন ঘটনা ঘটে। 


সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী মানসুরা (১০) প্রবাসী মোঃ মাসুম বিল্লাহ, মাতা আরজু বেগমের  মেয়ে । উপজেলার কালমেঘ ইউনিয়নের  ছোনবুনিয়া এলাকায় বাড়ি এবং ৩৮ নং ছোনবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রী। ঘটনা থেকে জানা যায়,  তৃতীয় শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষা চলাকালীন ফাঁকা রুমে একা পেয়ে একই স্কুলের শিক্ষক মোঃ মাসুম বিল্লাহ জড়িয়ে ধরে ও স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। এমন ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।


মানসুরার মা আরজু বেগম জানান, আমি এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা অফিসারের বরাবর পোস্ট অফিসের মাধ্যমে অভিযোগ দায়ের করছি। আমার মেয়ে মানসুরা আক্তার ৩৮নং ছোনবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী। বিবাদী একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত । সে  অত্যন্ত খারাপ, দুশ্চরিত্র, লম্পট প্রকৃতির লোক। ঐ শিক্ষক  বিদ্যালয়ের কচি-কাচা ছাত্রীদেরকে প্রায় সময়ই শ্লীলতাহানী করার চেষ্টা করে।  


গত ইং ০৮/১২/২০২৪ তারিখ  আমার মেয়ে মানসুরা আক্তার ৩য় শ্রেণিতে থাকা অবস্থায় অফিস কক্ষে ডেকে নেয়। আমার মেয়ে ওই শিক্ষকের  কথায় সরল বিশ্বাসে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে গেলে আমার মেয়েকে  বিভিন্ন ভাবে ফুসলাইয়া শ্লীলতাহানী করে এবং স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। আমার মেয়ে বাধা দিতে গেলে  তাকে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও হুমকী ধামকী দেয়। পরবর্তীতে আমার মেয়ে বাড়ীতে এসে  তার  চাচীর কাছে কান্নাকাটি করে বিষয়টি জানায়। 


পরে বিষয়টি আমি  জানতে পেরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকাসহ অন্যান্য শিক্ষকদেরকে বিষয়টি অবহিত করি এবং তারা আমাকে উক্ত বিষয়ের ন্যায় বিচার করে দিবে বলিয়া আশ্বাস দেয়।


 কিন্তু শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাথে উঠাবস করে।তাই  স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের  মাধ্যমে উক্ত বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। শ্লীলতাহানির ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যকর অবস্থায় চলছে। কিন্তু শিক্ষকের  প্রভাবের কারণে আমি কোন প্রকার ন্যায় বিচার অদ্য পর্যন্ত পাই নাই এবং আমাকে ঘুরাইয়া আসছে। তাই বিষয়টি ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য আমি জেলা শিক্ষা অফিসারের বরাবর  আবেদন করেছি। 

মানসুরার মা আরজু বেগম আরো বলেন, লোকমুখে জানতে পারি এই শিক্ষক  ইতোপূর্বে একাধিক ছাত্রীদের শ্লীলতাহানী করিয়াছে। যাহা সঠিক তদন্তে প্রমাণিত হবে।


এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ এর  সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগটি করা হয়েছে সেটি আরো দুই মাস আগে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে মীমাংসা করা হয়েছে । তিনি আরো জানান একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে ।যাতে করে আমি সুষ্টভাবে শিক্ষকতা না করতে পারি।


এ বিষয়ে ৩৮ নং ছোনবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রিনা রানী বলেন, এরকম একটি অভিযোগ আমার কাছে এসেছে, আমি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি, বিষয়টি যে দ্বিতীয় বার আবার গড়াবে তা আমি বুঝতে পারিনি তাহলে বিচারটি আরো কঠোরভাবে করতাম।


এ বিষয়ে পাথরঘাটা শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এখন পর্যন্ত আমার কাছে কোন ধরনের লিখিত অভিযোগ আসেনি । অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকনুজ্জামান খান  এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর জন্য বিদ্যালয় একটি নিরপদ স্থান । সেখানে যদি এমন ধরনের গর্হিত কাজ ঘটে থাকে তাহলে নিশ্চয়ই ঐ শিক্ষককে শাস্তির আওতায় আনতে হবে, এবং  সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


অভিযোগ দায়ের বিষয়ে বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু জাফর মো. সালেহ, জানান আমার কাছে একটি অভিযোগ পত্র পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের  ছোনবুনিয়া এলাকা থেকে আরজু বেগম নামে এক ছাত্রীর অভিভাবক অভিযোগ দায়ের করেছে।  অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্তের মাধ্যমে সঠিক বিষয়টি বের করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।