Advertisement
বরগুনা প্রতিনিধি:
তালতলী উপজেলা খাদ্য বান্ধব কর্মসুচীর ডিলার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে। বিএনপি নেতাদের চাপে টাকার বিনিময়ে আবেদন উড্ডো করা হয়েছে। শুক্রবার টাকা লেনদেনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরেছে। এতে নিন্দার ঝড় ওঠেছে। দ্রুত এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবী করেছেন বঞ্চিতরা। টাকা গুণে দেয়া লাইলী বেগমের স্বামী পনু আকন অনিয়মের কথা অকপটে স্বীকার করেছেন।
জানাগেছে, তালতলী উপজেলা খাদ্য বান্ধব কর্মসুচীর ডিলার নিয়োগ দিতে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস গত ফেব্রæয়ারী মাসে নোটিশ দেয়। গত ৫ মার্চ পর্যন্ত ছিল আবেদনের শেষ দিন। ডিলার নিয়োগ পেতে উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে ৭৮ জন আবেদন করেন। এর মধ্যে ৪৩ টি আবেদন বিভিন্ন কারন দেখিয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস বাতিল করেছেন। গত বুধবার ডিলার নিয়োগের দিন ধায্য করেন নিয়োগ বোর্ড। ওইদিন ৭৮ জন আবেদনকারীসহ বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী তালতলী উপজেলা খাদ্য অফিসের কার্যালয়ে জড়ো হয়। ওই সময় উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মোঃ শহীদুল হক ও উপজেলা যুবদল সদস্য সচিব রিয়াজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। তাদের উপস্থিতিতেই ডিলার নিয়োগের অনিয়ম নিয়ে বিএনপির কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালমা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ও যুবদলের সদস্য সচিবের দেয়া তালিকা অনুসারে ৬ ইউনিয়নে ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়। এদিকে শুক্রবার ডিলার নিয়োগে টাকা লেনদেনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরেছে। উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের একটি কক্ষে ৩৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখাগেছে, ডিলার নিয়োগের তালতলী বাজারের তালিকার লাইলি বেগমের স্বামী পনু আকন টাকা গুণে একজনকে দিচ্ছেন। তার স্ত্রী লাইলী বেগম দাড়িয়ে তার স্বামী টাকা গননা দেখছেন। পনু আকন টাকা গুনে দেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বড়বগী ইউনিয়নের তালতলী বাজারের কেন্দ্রের ডিলার নিয়োগে যাচাই বাছাইতে আমার স্ত্রী লাইলী বেগম, নাশির উদ্দিন, আলামিন, শাহজালাল ও আল আমিন উত্তীর্ণ হয়। পরে আমরা বারেক হাওলাদারের ছেলে আল আমিনের সঙ্গে সমঝোতা করেছি। আল আমিন আমাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, আল আমিন আমার কাছে আমার স্ত্রী ও নাশির উদ্দিনের টাকা দিয়েছে। আমি ওই টাকা গুণে দিয়েছি। এছাড়াও বড়বগী ইউনিয়নের টিএন্ডটি রোড কেন্দ্রে ইকবাল হোসেন, কামরুল হাসান অমিত ও সিদ্দিকুর রহমান যাচাই বাছাইতে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ওই কেন্দ্রেও টাকার বিনিময়ে ইকবাল হোসেনের সঙ্গে সমঝোতা করা হয়েছে বলে জানাগেছে।
বড়বগী ইউনিয়নের তালতলী বাজার কেন্দ্রের নিয়োগ পাওয়া আলামিনের মুঠোফোনে (০১৭২৫৯৬৪৩৭৭) এ বিষয়ে জানতে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তালতলী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তহিদুর রহমান বলেন, বড় বগী ইউনিয়নের দুইটি কেন্দ্রে আটজন যাচাই বাছাইতে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ওই দুই কেন্দ্রের ছয়জন আবেদন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তাই লটারী দেয়ার প্রয়োজন হয়নি। টাকা লেনদেরে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা তাদের আভ্যান্তরীন বিষয়। এখানে আমার কিছুই করার নেই।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালমা বলেন, অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।