Advertisement
সজীব আহাম্মেদ,দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি:
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে খাদ্যবান্ধব ডিলার নিয়োগের বাছাই পর্বে নাম বাদ পড়ায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে জনসম্মুখে ওই কর্মকর্তাকে শাসানোর অভিযোগ উঠেছে ওমর ফারুক নামে শালডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদল নেতার বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি দেবীগঞ্জ উপজেলায় খাদ্যবান্ধব ডিলার নিয়োগের জন্য গত ২ ফেব্রুয়ারী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও খাদ্যবান্ধব কমিটির সদস্য সচিব স্বাক্ষরিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ২৭ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ করা হয়। আবেদনকারীদের আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই শেষে যোগ্য প্রার্থীদের নাম সোমবার (১০ মার্চ) প্রকাশ করা হয়। একই দিনে ডিলার নিয়োগের জন্য উপজেলা পরিষদ হল রুমে লটারির আয়োজন করা হয়।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী শালডাঙ্গা ইউনিয়নের গড়দিঘী কেন্দ্রের জন্য মোট ০৯ জন আবেদন করেন। এরমধ্যে ০৪ জন শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের আবেদন বাতিল করা হয়। এর মধ্যে একজন ওমর ফারুক। তার আবেদনটি বাতিলের কারণ হিসেবে গুদামের ধারণক্ষমতা কম রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী গুদাম ১৫ মে. টন ধারণক্ষমতা হওয়ার কথা থাকলেও ওমর ফারুকের গুদাম ৫ মে. টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন।
সোমবার (১০ মার্চ) আবেদন বাতিলের বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুদেব কুমার দাসের কার্যালয়ে যান যুবদল নেতা ওমর ফারুক। এই সময় ওমর ফারুক সেই কর্মকর্তার সাথে উচ্চকণ্ঠে বাকবিতণ্ডা করতে থাকেন। গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত এক ভিডিওতে ওমর ফারুককে বলতে শোনা যায়, আপনি কেন বাতিল করলেন। কত টাকা খাইছেন। চলেন তদন্ত করেন। আপনি এখান থেকে যাবেন আজকে তারপরে কথা হবে। না হলে কোন পর্যায়ে যাওয়া লাগবে সেই পর্যায়ে যাবো। ওই পর্যায়ে যাবো মিয়া। ফাজলামি মনে করেন চাকরি চোদান।
এই সময় খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মুঠোফোনে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানকে জানান।
তখন ওমর ফারুককে আবার বলতে শোনা যায়, আমার লোক মারা গেছে আমি মাটি দিতে গেছি। আপনি কেন রিপোর্ট দিলেন আমার গুদাম নাই?
মুঠোফোনে কথা বলা অবস্থায় ইউএনও ওমর ফারুককে অফিসে যেত বলেছেন বলে জানান খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত ওমর ফারুক বলেন, যোগ্য প্রার্থী এবং আমার গুদাম একই। এরপরও আমার আবেদন অন্যায় ভাবে বাতিল করা হয়েছে। কেন আবেদন বাতিল করা হলো জানতে চাইলে অফিসার আমাকে কিছু না বলে দেওয়ালে নোটিশ দেওয়া আছে বলে সেখানে দেখতে বলেন। এগুলো নিয়ে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে হুট করে সংবাদ প্রকাশ না করার ব্যাপারে বলেন ওমর ফারুক।
এবিষয়ে জানতে দেবীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও খাদ্যবান্ধব ডিলার নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব সুদেব কুমার দাসের মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এবিষয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটির সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, বিষয়টি শুনেছি। অভিযোগ কারো বিরুদ্ধে থাকতে পারে। তাই বলে কারো অফিসে গিয়ে এমন আচরণ কাম্য নয়। আমি ওই ব্যক্তির অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের লটারি স্থগিত রেখেছি। আগামীকাল নিজে গুদাম পরিদর্শনে যাবো।