Advertisement
সজীব আহাম্মেদ, দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি:
পঞ্চগড়-২ সংসদীয় আসনের রাজনীতিতে বিএনপির একক আধিপত্য ও রাজনৈতিক বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন পঞ্চগড় জেলা জামায়াতের যুব,ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আবুল বাশার বসুনিয়া।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ভোর ৬টায় তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্টে তিনি এ অভিযোগ করেন।
তিনি তার ফেসবুক পোস্টে রাজনৈতিক বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ এনে লিখেন, পঞ্চগড় ২ আসনের রাজনীতিতে রাজনৈতিক বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা চলছে, এতদিন যাদেরকে বড় ভাই হিসেবে শ্রদ্ধা করতাম তারাই আজকে ছোট ভাইদের কে স্নেহের চোখে দেখছেন না, দেখছেন তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে। অথচ কয়েকমাস আগে জুলাই বিপ্লবে একসাথে দেবীগঞ্জকে আমরা স্বাধীন করলাম, শুধু তাই নয় বোদা দেবীগঞ্জের ভবিষ্যৎ কথিত কান্ডারি যাকে বলা হয় তিনি ৫ আগস্ট আমাকে দুপুর ২ টার সময় ফোন দিলেন, বাবা দেবীগঞ্জের পরিবেশ কেমন, এখন কি দেবীগঞ্জে যাওয়া যাবে? আমি তাকে নির্ভয় দিলাম আপনি আসেন কোন সমস্যা নাই, তিনি আসলেন আমরা একসাথে বিজয় মিছিল করলাম, চৌরাস্তায় বক্তব্য রাখলাম, এরপর আবার বিরদর্পে জামাত-শিবির ও বিএনপি আলাদা আলাদা বিজয় মিছিল করে বিদায় নিল।
রাজনৈতিক দখলদারিত্বের অভিযোগ এনে তিনি লিখেন, ৬ আগস্ট থেকে তারা নিজেরা স্বাধীনতার একক শক্তি মনে করা শুরু করে দিল। বোদা দেবীগঞ্জে জামায়াতের প্রার্থী ঘোষনা না হওয়ায় একক প্রার্থী হিসেবে তারা প্রশাসনের কাছ থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নেওয়া শুরু করে দিল। শবে বরাতের সময় একক বাজেট তারা নিল, টিসিবি ৭৫% তারা নিল, ১৫ টাকা কেজি চালের সংশোধনী তালিকা তারা এককভাবে দিচ্ছে, ৩০ কেজি চালের অনলাইন চালু হলে তারা সব ইউনিয়নে একক ভাবে তাদের লোক দেয়ার চিন্তা ও চেতনা লালন করে যাচ্ছে, টিআর কাবিখার বরাদ্দ বেশিরভাগই তাদেরকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে, পনের টাকা কেজি চাউলের যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রত্যেক ইউনিয়নে তাদের লোককে নেওয়া হয়েছে। কলেজ স্কুল ও মাদ্রাসার প্রত্যেকটাতে এ্যডক কমিটিতে তাদেরই লোকদেরকে নেওয়া হচ্ছে। শীতবস্ত্র বেশিরভাগ তারা নিয়ে নিয়েছে, বর্তমানে সাত কার্টুন খেজুর আসছে, জানিনা এগুলো কারা খেয়ে ফেলবে। বিপ্লবের পরে এই প্রথম ইউনিয়ন পরিষদ গুলোতে বরাদ্দ ঢুকেছে জানিনা এর কতটুকু কাজ হবে না লুটপাট হবে। কৃষি পণ্য যা দেওয়া হচ্ছে তা তাদেরই লোকেরা বেশিরভাগ নিয়ে নিচ্ছে, সারের ডিলার তাদের লোক দরকার, ১৫ টাকা কেজি চালের ডিলার তাদের লোক দরকার, হাট ঘাট বালু মহল তাদেরই প্রয়োজন, ঈদের সামনে পরিবার প্রতি দশ কেজি করে চাল দেওয়া হবে জানিনা এগুলো কারা পাবে। তাদের ভিতরে রূপটা হচ্ছে এরকম। আর তারা মঞ্চে জামায়াতের বিরুদ্ধে একের পর এক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন।
বিএনপির বিরুদ্ধে মামলা বানিজ্যের অভিযোগ তুলে এই জামায়াত নেতা লিখেন, জামায়াত এ পর্যন্ত দেবীগঞ্জ কে সুন্দর রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরে তারা কিন্তু ডাকাতি মামলা খান নাই, কিন্তু আপনারা ডাকাতি মামলা খেয়ে বর্তমানে জেল খাটছেন, যে মামলা বাণিজ্য আওয়ামী লীগ করতো সে মামলা বাণিজ্যের ডিলার কিন্তু আপনারা হয়েছেন, অপরাধী আওয়ামীলীগ গুলো টাকা দিয়ে গ্রেপ্তার মুক্ত হয়ে আছেন, আর নিরপরাধ আওয়ামী লীগ গুলোকে গ্রেপ্তার করানো হচ্ছে। এই অপরাজনীতি দেবীগঞ্জের মানুষ বুঝে। আপনাদের যে কয়জন নেতা এখন ইউএনও অফিসে ঘুরঘুর করে আওয়ামী লীগের দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরে তারা একটা মামলাও খায় নাই একদিন জেলও খাটে নাই। আর আমরা ১৫ বছরে ১৫ টা মামলা খেয়েছি বছরকা বছর জেল খেটেছি রিমান্ভ খেটেছি সেল খেটেছি, শত শত নেতাকর্মী বাড়িঘর ছাড়া হয়েছে ছিল, জেল খেটেছে, দেবীগঞ্জে দলীয় মামলা ৩০ টার উপরে ।
চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার কথা বলে তিনি লিখেন,মঞ্চে এখন আমাদের বিরুদ্ধে বড় বড় বক্তব্য আওড়ানো হচ্ছে। সরলতাকে দুর্বলতা ভাবা হচ্ছে অথবা পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি আশা করব সবার কাছে দায়িত্বশীল আচরণের। কারণ দেবীগঞ্জের রাজনীতির মেরুদন্ড কার কত শক্ত এটা আমার জানা আছে। সাড়ে পনেরো বছরে যে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে টিকে ছিলাম রাজনীতিতে আর এখন নতুন চ্যালেঞ্জ কে আর চ্যালেঞ্জ মনে হয় না। তবে যদি কেউ চ্যালেঞ্জ ছুরে দেয় তাহলে সেটা গ্রহণ করতেও দ্বিধাবোধ করব না।
শান্তিপূর্ণ রাজনীতির আহ্বান জানিয়ে তিনি লিখেন, দেবীগঞ্জে যারা রাজনীতির নামে অপরাজনীতি করছে, পারলে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলুন জনগণ হয়তো আপনাকে সমর্থন করবে। আল্লাহর দিন কায়েমের আন্দোলন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামিকে দোষারোপ করে নিজেদেরকে নির্দোষ প্রমাণ করা একটি দুর্লভ কাজ, যেটা করতে গিয়ে শেখ হাসিনা নিজে এখন ভারতে অবস্থান করছে। আমরা মনে করি ইসলামবিদ্বেষীর সুরে, আওয়ামী লীগের সুরে, ভারতের সুরে যারাই কথা বলবে ইনশাল্লাহ জাতি তাদেরকেই প্রত্যাখ্যান করবে। পরিশেষে এই কামনা করে শেষ করছি - দেবীগঞ্জ অপ রাজনীতি মুক্ত হোক, দায়িত্বশীল আচরণ যুক্ত নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হোক। সবাই যেন সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারি ।