Advertisement
খাঁন আহম্মেদ হৃদয় পাশা, টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি:
যারীন তাসনীম ও যাহরা তাসনীম যমজ বোন। মায়ের পেট থেকে স্কুল-কলেজের বেঞ্চে একসঙ্গে ছিলেন। এক টেবিলে পড়াশোনা,এক বিছানায় ঘুমানো এভাবেই কেটেছে ১৭টি বছর। একজনের স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়া, অন্যজনের প্রকৌশলী। সম্প্রতি যারীন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) এবং যাহরা টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। স্বপ্ন পূরণে এখন থেকে তাঁদের আলাদা থাকতে হবে।
যারীন ও যাহরা টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার শিক্ষক দম্পতি আবু জুয়েল ও চায়না আক্তারের যমজ মেয়ে। শিক্ষাজীবনে পিএসসি থেকে শুরু করে সব পরীক্ষায় তাঁরা জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। যারীন-যাহরার বাবা আবু জুয়েল উপজেলার সূর্য তরুণ শিক্ষাঙ্গন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক আর মা চায়না আক্তার উপজেলার শান্তিকুঞ্জ একাডেমির সহকারী প্রধান শিক্ষক। তাঁদের বাড়ি উপজেলার কচুয়া গ্রামে।
যারীন তাসনীম এবার বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এর আগে এইচএসসি পরীক্ষায় রাজধানীর হলিক্রস কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে মায়ের পেটে ছিলাম। এক দোলনায় শুয়েছি। বড় হয়ে একই বিছানায় ঘুমিয়েছি। স্কুল-কলেজে একই বেঞ্চে বসে পড়াশোনা করেছি। শুধু কলেজ ছাড়া ওয়ান থেকে টেন পর্যন্ত এক সেট বইয়ে দুজন পড়েছি। আমাদের কখনো মুঠোফোন দেওয়া হয়নি। তবে কলেজে দুজনে মিলে একটি বাটন ফোন চালিয়েছি। ১৭ বছর একসঙ্গে থেকেছি। স্বপ্নপূরণে ও ভবিষ্যৎ জীবন গড়তে এখন থেকে আমাদের আলাদা থাকতে হবে।’
যারীন বলেন, স্কুলজীবনে গণিত ভালো লাগত তাঁর। আর কলেজে উঠে পদার্থ ভালো লাগত। এ কারণে তিনি প্রকৌশলী হওয়ার চিন্তা করতেন। আল্লাহ তাঁর আশা পূরণ করেছে। তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।বয়সে দুই মিনিটের ছোট যাহরা তাসনীম বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতাম চিকিৎসক হওয়ার। চিকিৎসক হয়ে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত রোগীদের সেবা করতে চাই। দেশবাসী সবার কাছে দোয়াপ্রার্থী। আমি যেন আমার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি।’
যারীন-যাহরার মা চায়না আক্তার বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই যারীন ইঞ্জিনিয়ার আর যাহরা ডাক্তার হতে চেয়েছিল। আল্লাহর অশেষ রহমত এবং মেয়েদের চেষ্টা ও পরিশ্রমে স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে।’ সূর্য তরুণ শিক্ষাঙ্গন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা বিজ্ঞানের শিক্ষক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ওদের আমি গণিত পড়িয়েছি। ওরা আমাদের বিদ্যালয়ের গর্ব। দোয়া করি, ওরা বড় হয়ে ভালো মানুষ হবে। দেশ ও দশের সেবা করবে।আমি ওদের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।