lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
শনিবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৫
Last Updated 2025-04-05T15:42:57Z
রাজনীতি

বৈষম্যহীন দেশ গড়ার প্রত্যয়ে বরগুনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির সংবাদ সম্মেলন

Advertisement


 

বরগুনা প্রতিনিধি:

একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য জেলা ভিত্তিক বৈষম্য দূর করা আবশ্যকতা তুলে ধরে জাতীয় নাগরিক পার্টি সাংবাদিক সম্মেলন করেছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি আত্মপ্রকাশের পর এই প্রথমবারের মতো দলটি বরগুনায় তাদের কার্যক্রম জনসম্মুখে করলো।


আজ শনিবার ৫ মার্চ বিকেল পাঁচটায় বরগুনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে মূল আলোচনা করেন সংগঠনটির যুগ্ম সদস্য সচিব ফয়সাল মাহমুদ শান্ত। এসময় বরগুনা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 


সংবাদ সম্মেলন এসে ফয়সাল মাহমুদ শান্ত তার বক্তব্যের শুরুতে জুলাই আন্দোলনে সহযোদ্ধা শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। এছাড়াও তিনি ফিলিস্তানে জনগণের ওপর  অত্যাচার ও হত্যাকান্ডের প্রতি তীব্র নিন্দা এবং তাদের মুক্তির দাবী জানান। তিনি আরো বলেন দুই হাজারের মত শহীদের ত্যাগের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কিন্তু আমরা অনেকের মধ্যেই শহীদ ব্যক্তিদের আকাঙ্খার প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছিনা।


তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের বরগুনা জেলা বাংলাদেশের অবহেলিত ও বৈষম্যের শিকার একটি অংশ। বিগত সময়গুলোতে যেই সরকারই এসেছে তারাই এই বরগুনাকে অবহেলিত করে রেখেছে। আমরা জুলাই অভ্যূত্থান এর মধ্য দিয়ে একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়েছি, এই নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য জেলা ভিত্তিক বৈষম্য দূর করা আবশ্যক। আমি আপনাদের বরগুনার সন্তান, এই মাটিতে আমি বড় হয়েছি, এখানে মানুষের দু:খ দুর্দশার কথা আমি নিজে ফেস করেছি। এই অঞ্চলের মানুষের মুক্তির জন্য আমাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তি দরকার। আমাদের এই বরগুনায় সরকার দলীয় এমপি ছিলো বহু বছর কিন্ত আমরা দেখেছি তাদের চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, সন্ত্রাসী সহ নানা কার্যক্রম। কিন্তু আমাদের খেটে খাওয়া মানুষের জন্য কোনো পদক্ষেপ তাদের ছিলোনা। 


আমাদের এই অঞ্চলের চিকিৎসা ব্যবস্থার অবস্থা খুবই করুণ, ৬টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বরাদ্দ খুবই কম এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা খুবই অনুন্নত। আমরা দেখেছি এই অঞ্চলের কেউ অসুস্থ হলে কি ভয়াবহ ভোগান্তির শিকার হয়। এই অচলাবস্থার দূর করাই হবে এনসিপির আগামীর রাজনীতি।


বরগুনার রাস্তাগুলোর অবস্থার ভয়াবহতা তুলে ধরে ফয়সাল মাহমুদ বলেন, ঢাকা থেকে বরগুনা আসার জন্য আমাদের একটি ট্রেন লাইন দরকার। আজ পর্যন্ত আমাদের মধ্য থেকে এই দাবিটি কোনো সরকারের কান পর্যন্ত কেউ পৌঁছায়নি। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ঢাকা - বরগুনা রেল লাইনের ব্যবস্থা করার জন্য এই উদ্দ্যেশ্যে কাজ করবো। 


বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার পানি সংকট নিয়ে সরকারের নানা প্রজেক্ট বাস্তবায়ন হলেও আমাদের বরগুনায় সুপেয় পানির সংকট নিয়ে কোনো দৃশ্যমান কার্যক্রম আমরা পাইনি। এই অঞ্চলের মানুষের শারীরিক সুস্থতার জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা জরুরি। আমাদের বেড়িবাধগুলো অরক্ষিত, খাল গুলো দখল হয়ে গিয়েছে। এখানের অধিকাংশ মানুষ কৃষি কাজের সাথে জড়িত এগুলো উন্নয়ন ছাড়া বরগুনার মানুষের মুক্তি হবেনা।


বরগুনা জেলা হিসাবে বেশ বড় এবং প্রায় সবগুলো উপজেলা আলাদা ভাবে নদী দিয়ে বেষ্টিত। পুরো জেলায় ২ টি আসন কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়, পুর্বের ন্যায় ৩টি সংসদীয় আসন বহাল করতে হবে। যাতে করে সংসদ সদস্যরা আরো বেশি জনগণের কাছাকাছি যেতে পারে।


আমরা চাই আগামীর বরগুনাতে মানুষ তাদেরই গ্রহণ করবে যারা বরগুনার মানুষ ও মাটির উন্নয়ন নিয়ে চিন্তা করে। ২ হাজার শহীদের রক্তের মধ্য দিয়ে পাওয়া বাংলাদেশে কোনোভাবেই পূর্বের ন্যায় জনগণকে বোকা বানিয়ে রাজনীতি আমরা করতে দিবোনা। আগামীর রাজনীতি হবে জনমানুষের রাজনীতি। আমরা দেখেছি রাজনৈতিক নেতারা চাঁদাবাজি জমি দখল করে মানুষের উপরে অত্যাচার করছে। এটা আগে আওয়ামিলীগ করতো এখন নতুন করে যদি কেউ আবার এসব চাঁদাবাজি রাহাজানি করে আপনারা সবাই মিলে এর প্রতিবাদ করবেন। আমরা যেভাবে জীবন দিয়ে স্বৈরাচার হাসিনাকে তাড়িয়েছি, বর্তমানের যেকোনো চাঁদাবাজকেও আমরা তাড়াবো ইনশাআল্লাহ। 


আমরা এনসিপির সমর্থক, নেতা কর্মীরা মানুষের দারে দারে যাব। জন মানুষের ভাষাকে নিজেদের রাজনীতিতে রূপান্তরের চেষ্টা করবো। মানুষ যদি চায় আগামীর বাংলাদেশ কোনো দুর্নিতিবাজ নেতৃত্ব না দিয়ে সৎ ও যোগ্য মানুষ নেতৃত্ব দিবে। আমরা মানুষকে সেই ভরসার জায়গা দিতে চাই। সততা ও যোগ্যতা দিয়ে আমরা আমাদের রাজনীতি দাড় করাতে চাই। আমরা কোনো দখল কিংবা হুমকির রাজনীতি এই বরগুনার মাটিতে দেখতে চাইনা। বরগুনাবাসী আপনারা আপনাদের ন্যায্য পাওনা বুঝিয়া পাইবার জন্য, সর্বদা সজাগ থাকবেন। কারো ভীতি গণ্য করবেন না। আপনারা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। এই ভূখণ্ডের মানুষের মুক্তি আপনারাই আদায় করতে পারবেন, ইনশাআল্লাহ। এই অঞ্চলের আগামীর রাজনীতি হবে সেবার, এখানে সকল ধর্ম, বর্ণ, ও গোত্রের মানুষের অধিকার আদায়ই হবে আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গিকার।


ফয়সাল মাহমুদ সংগঠনের শক্তি বৃদ্ধি করতে বলেন, ভাই ও বোনেরা আমাদের রাজনৈতিক দলের সাথে কর্মী, সমর্থক, সহযোগী ও শুভাকাঙ্ক্ষী হিসাবে যুক্ত হতে চান তারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটি দিয়ে সারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীকে একত্রিত করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে একত্রিত হবো ইনশাআল্লাহ।