lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
শনিবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৫
Last Updated 2025-04-05T08:40:01Z
ধর্মীয় উৎসব

কুড়িগ্রাম চিলমারীতে ঐতিহ্যবাহী অষ্টমীর স্নান,ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে লাখো ভক্তের ঢল

Advertisement


 


মোঃ মশিউর রহমান বিপুল, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী অষ্টমীর স্নান ও মেলা উপলক্ষে লাখো পূণ্যার্থীর ঢল নেমেছে। আজ (শনিবার ) পূণ্যতোয়া খ্যাত ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে ঐতিহ্যবাহী অষ্টমীর স্নান ও মেলা অনুষ্ঠিত হয় অষ্টমীর স্নান উপলক্ষ্যে ব্রহ্মপুত্র তীরে যাবতীয় প্রস্তুতি ছিলো উপজেলা প্রশাসন ও স্নান উৎসব কমিটির। ইতোমধ্যে হাজারো পূণ্যার্থী ব্রহ্মপুত্র তীরে উপস্থিত হতে শুরু করেছেন। চিলমারী উপজেলার রাজারভিটা এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে আজ(৫এপ্রিল) ভোর চারটা থেকে শুরু হয়ে ভোর সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত স্নানের উত্তম লগ্ন ধার্য করা হয়েছে। তবে দিনব্যাপী স্নান উৎসব চলবে বলেও স্নান উৎসব কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।


জানা গেছে, প্রায় ৪'শ বছর ধরে চৈত্র মাসের শুক্ল পক্ষের অষ্টমী তিথিতে এ পূণ্যস্নান সম্পন্ন করেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের এ স্থানটিকে তারা তীর্থ স্থান হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন। হিন্দু ধর্ম মতে, এটি একটি পূণ্য কর্ম এবং এই স্নানের মাধ্যমে তাদের পাপ মোচন ঘটে। এই পাপ মোচনের অভিপ্রায়ে প্রতিবছর লাখো পূণ্যার্থী সমবেত হন ব্রহ্মপুত্র তীরে। জেলা ও জেলার বাইরে থেকে লাখো পূণ্যার্থীর ব্রহ্মপুত্রের এই স্থানে স্নান করতে আসেন। প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরেও জেলা ও জেলার বাইরে থেকে ব্রহ্মপুত্র তীরে পূণ্যার্থীরা আসতেছেন । ইতোমধ্যে হাজার হাজার পূণ্যার্থী স্নান ঘাটের আশে পাশে অবস্থান নিয়েছেন। অনেকেই উপজেলার প্রায় (৪২) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের বসতভিটায় আশ্রয় ব্যবস্থা করে নিয়েছে। কেউ কেউ উঠেছেন তাদের আত্বীয় স্বজনের বাড়িতে। অষ্টমীর স্নান উপলক্ষে চিলমারী উপজেলার ঘরে ঘরে চলে উৎসবের আয়োজন। দূর দূরান্ত থেকে আত্বীয় স্বজনরা আসেন। স্নান উৎসব কমিটির দেওয়া তথ্য মতে, অষ্টমী স্নান উপলক্ষে চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র তীরে কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পূণ্যর্থীদের বিচরণ হয়। চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র তীরের রমনা ঘাটের উত্তর দিক থেকে শুরু করে রাজারভিটা হয়ে রুকুনুদৌলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত অষ্টমীর স্নান ঘাট হিসেবে নির্ধারণ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। অষ্টমীর স্নান উপলক্ষে ঘাট এলাকায় দিনব্যাপী মেলার আয়োজন থাকবে। স্নান ঘাট ইজারা গ্রহণকারীকে মেলার স্থানে এ বছর ছামিয়ানা টাঙায়ে  ব্যবস্থা নিয়েছেন । 


এছাড়াও ঘাট এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। লগ্ন অনুযায়ী নিজেদের সুবিধাজনক সময়ে ধর্মীয় এ স্নান সেরে নেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। স্নান উৎসব নির্বিঘ করতে পর্যাপ্ত সহযোগিতা করছেন উপজেলা প্রশাসন। পাশাপাশি স্নান ও মেলা উপলক্ষে জোরদার করা হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা । দুর-দূরান্ত থেকে আসা পূণ্যার্থীদের নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী, পুলিশ, ও আনসার সদস্য ছাড়াও সেচ্ছাসেবী মোতায়েনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অষ্টমীর স্নানে যোগ দিতে দিনাজপুর থেকে আসা বিজয় কুমার জানান, প্রতিবছর ব্রহ্মপুত্র নদে স্নানে আসি। পরিবার ও আত্নীয়স্বজন ২০ জন সদস্য নিয়ে পিকাপে করে চিলমারী অষ্টমীর স্নানে এসেছি । এবারে শনিবার  স্নান হচ্ছে । ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করলে সকল পাপ মোচন হয়। স্নান উৎসব কমিটির সভাপতি তপন কুমার এনি বলেন, এটি পূণ্যার্থীদের জন্য পবিত্র দিন। এবছর চিলমারী অষ্টমীর স্নানে তিন লক্ষাধিক পূণ্যার্থীর আগমন ঘটবে বলে আমরা ধারণা করছি। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি সহ স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন পূণ্যার্থীদের নানা ভাবে সহযোগিতা করছেন। 


চিলমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হারেসুল ইসলাম বলেন অষ্টমীর স্নান উপলক্ষে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে। সেনাবাহিনী, পুলিশ,আনসার ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের সহযোগিতায় স্বেচ্ছাসেবক গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। যারা সবসময় উৎসব নির্বিঘে স্নান সম্পন্ন করতে সার্বিক সহযোগিতা করছেন। আশা করি কোন ধরনের অপ্রতিকর ঘটনা ঘটবে না ।