lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫
Last Updated 2025-04-23T10:58:44Z
আইন ও অপরাধ

ডোমারের গোমনাতীতে অধ্যক্ষকে মারধর, ধর্ষনের গুজবে মব জাষ্টিস, থানায় মামলা

Advertisement


 

মোসাদ্দেকুর রহমান সাজু, ডোমার নীলফামারী প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ৩নং গোমনাতী ইউনিয়নের গোমনাতী মডেল একাডেমির অধ্যক্ষ মিজান আহমেদের নামে মিথ্যা ধর্ষনের গুজব ছড়িয়েছে একদল দূস্কৃতিকারী। এরপর মব জাস্টিস সাজিয়ে বস্ত্র হরন, মাথার চুল কেটে রং মাখিয়ে দিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে বেধড়ক গণপিটুনি ও হত্যার উদ্দেশ্য মারপিট করেছে দূস্কৃীতিকারীরা। এ ঘটনায় মব জাস্টিসকারীদের নামে অধ্যক্ষ মিজান আহমেদ বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।


ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার ১৮ই এপ্রিল দুপুরে উপজেলার গোমনাতী বাজারে। মব জাস্টিস সাজিয়ে দূস্কৃতিকারীরা ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইফ চালিয়ে মডেল একাডেমির অধ্যক্ষ মিজান আহমেদকে স্কুলছাত্রীর ধর্ষক প্রমানের অপচেষ্টা চালায়। এরই মধ্যে এলাকার এক মহৎ ব্যাক্তি অধ্যক্ষের এই করুণ অবস্থা দেখে ৯৯৯ এ ফোন করেন, খবর পেয়ে ডোমার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অধ্যক্ষকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসলে প্রকৃত ঘটনা বেড়িয়ে আসে। এ ঘটনায় সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।


এ ঘটনায় রোববার ১৯শে এপ্রিল রাতে মডেল একাডেমির অধ্যক্ষ মিজান আহমেদ বাদী হয়ে মব জাস্টিসকারী আটজনের নাম উল্লেখ পূর্বক আরও ১৫০/২০০ জনের নাম অঞ্জাত রেখে ডোমার  থানায় ১টি মামলা দায়ের করেন।


এবিষয়ে ওই ছাত্রীর বাবা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন, অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন আসামিরা গুজব ছড়িয়ে আমার এবং আমার মেয়ের সম্মানহানি ঘটিয়েছে, আমি এর বিচার চাই।


এবিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক এলাকাবাসী জানায়, অধ্যক্ষ মিজানের সুনামের কারণে তার প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। তার এই সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য তারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে, তাছাড়া তার প্রতিষ্ঠানে এবছরে পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে, এবং তার প্রতিষ্ঠানের পড়াশোনার মান অনেক ভালো এবং উন্নত। দূস্কৃতিকারীরা প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংস করতে অধ্যক্ষ মিজানের পিছনে উঠে পরে লেগেছে।


ঘটনার বিষয়ে গোমনাতী মডেল একাডেমির অধ্যক্ষ মিজান আহমেদ এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, দীর্ঘ চার বছর ধরে আমি আমার অক্লান্ত পরিশ্রম ও অর্থ ইনভেস্ট করে প্রতিষ্ঠানটি তিল তিল করে একটি মডেল প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাড় করাই। প্রতিষ্ঠানটি ডেভেলপমেন্ট হওয়ায় অনেকের চক্ষুশূল হয়ে দাড়িয়েছে, তারা এই প্রতিষ্ঠান থেকে আমাকে সরানোর জন্য বিভিন্ন ভাবে পায়তারা শুরু করেছে। তিনি বলেন,ঘটনার দিন সুইট এবং তার গ্যাং ২০/২৫ জন ছেলে আমাকে স্কুল থেকে টেনে হেঁচড়ে বের করে নিয়ে যেতে আসছিল। আবার তারা পরেক্ষনে আমার কাছে টাকা দাবি করে যে আপনি আমাদেরকে টাকা দেন আমরা সবকিছু ঠিক করে দিচ্ছি। আমি টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করিলে তারা আমার পরনের গেঞ্জি টেনে ছিড়ে ফেলে আমাকে বিবস্ত্র করে, আমার চুল কেটে দিয়ে মাথায় রং মাখিয়ে দিয়েছে আরও অনেক কিছু করেছে যেটা আপনারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেই দেখেছেন। তারা আমার এই প্রতিষ্ঠানটি কুক্ষিগত করতে চায়। এরপরেও তারা ক্ষ্যান্ত হননি, তারা সেই ছাত্রীর বাবাকে ডেকে বলে আমরা আপনাকে যেভাবে স্টেটমেন্ট দিতে বলবো আপনি সেইভাবে স্টেটমেন্ট দিবেন। তাদের কথায় ওই ছাত্রীর বাবা সায় দেয়নি। তবে তারা আমাকে হত্যার চেষ্টায় আক্রমণ করেছিল।


এবিষয়ে ডোমার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আরিফুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সব আসামিরা আত্নগোপন করলেও তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে গুজব ছড়িয়ে তারা মব জাস্টিস তৈরি করে ওই শিক্ষককে গণপিটুনির মাধ্যমে হত্যার চেষ্টা করেছিল। যে ছাত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষনের গুজব তোলা হয়েছে তার অভিভাবকরাও থানায় মব জাস্টিস সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সেটিও তদন্ত করা হচ্ছে।