lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫
Last Updated 2025-04-11T09:38:06Z
জাতীয়

বেড়ায় মাঝ নদীতে জাহাজ থেকে তেল চুরিতে সক্রিয় সিন্ডিকেট

Advertisement


 


পাবনা সংবাদদাতা: সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী তেলের ডিপোতে আনলোড এর উদ্দেশ্যে আসা জাহাজ থেকে তেল চুরির উৎসব চলছে। নদীতে দিন রাত মিলে প্রতিদিন তেলবাহী জাহাজ থেকে চুরি হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার লিটার ডিজেল,অকটেন। বাঘাবাড়ি বন্দরে নদীতে থাকা জাহাজ থেকে তেল চুরি থামছেই না। সিন্ডিকেট তৈরি করে বিশেষ কায়দায় পাইপলাইন থেকে ড্রামে তেল ভরার পর ছোট নৌকায় করে সেগুলো চলে যাচ্ছে বেড়া সহ আশপাশের কালোবাজারে। 


এই চুরির সঙ্গে জড়িত একটি শক্তিশালী চক্র। এর মধ্যে রয়েছেন জাহাজের সারেং,তেল ডিপোর কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী। তেল চুরির কারণে বছরে সরকারের ক্ষতি হচ্ছে শত শত কোটি টাকা। সেই টাকায় ফুলেফেঁপে উঠছে অপরাধী চক্র। স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায় এই লুটপাট চললেও যেন দেখার কেউ নেই। ঘাটতি তেলের নয়ছয় হিসাব

বেশির ভাগ জাহাজে প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার তেল চোরাই চক্রের কাছে বিক্রি হয়। এই তেলের ঘাটতি পূরণে নেওয়া হয় অভিনব পন্থা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিজ্ঞ প্রত্যক্ষদর্শী জানান, চুরি হওয়া তেলের হিসাব গোপন রাখতে জাহাজের সারেং ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা একাধিক কৌশল নেন। এতে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ক্ষতির মুখোমুখি হয়। এই চক্রের সঙ্গে ডিপোর অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত। তারাও নির্দিষ্ট অঙ্কের কমিশন পেয়ে থাকেন। ঘাটতি পূরণে কৌশল হিসেবে কাগজে বেশি, বাস্তবে কম তেল বুঝে নেওয়া হয়। প্রতি জাহাজে যে পরিমাণ তেল আনা হয়,তার হিসাব একটি নথিতে উল্লেখ থাকে। তবে এই নথিতে ইচ্ছা করে তেলের পরিমাণ কমিয়ে নেন তারা। ফলে তেল চুরি হলেও কাগজপত্রে সব ঠিকঠাক দেখানো যায়। এ ছাড়া অন্য পদ্ধতিতে তেলের পরিমাণ মাপার জন্য নির্দিষ্ট গেজ বা মিটার ব্যবহার করা হয়। সারেং ও ক্রুরা আগেই গেজের রিডিং কারসাজি করে রাখেন। যাতে ডিপোতে পৌঁছানোর সময় হিসাব ঠিক থাকে। এতে কাগজে দেখানো পরিমাণ ও বাস্তব তেলের পরিমাণের ফারাক ধরা পড়ে না। আবার কখনও কখনও তেল চুরির ঘাটতি মেটানোর জন্য ট্যাঙ্কারের নিচের অংশে পানি মিশিয়ে দেওয়া হয়। ফলে তেলের পরিমাণ বেশি দেখানো যায়।নিয়ম অনুযায়ী জাহাজ থেকে খালাসের পর ডিপোর কর্মকর্তাদের তেল পরিমাপ করার কথা। তবে অনেক সময় তারা ইচ্ছা করে ভুল তথ্য লেখেন বা গেজের রিডিং সঠিকভাবে পরীক্ষা করেন না। কিছু অসাধু কর্মকর্তা চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে চুরি হওয়া তেলের হিসাব গোপন রাখতে সাহায্য করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ীতে বড়াল নদীর তীরের বন্দরে রয়েছে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা কোম্পানির তেলের ডিপো। এখান থেকে উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হয়। জ্বালানি তেলসহ ৯০ শতাংশ নিত্যপণ্য নামে এই বন্দরে। প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে নাব্য সংকট দেখা দেওয়ায় পণ্য নিয়ে বড় জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারে না। সে সময় বাঘাবাড়ী থেকে প্রায় ৪৫ মাইল দূরে মানিকগঞ্জের বাহাদুরাবাদে যমুনা নদীতে জাহাজগুলোকে অবস্থান করতে হয়। সেখান থেকে ছোট ছোট জাহাজে করে মালপত্র আসে।


বেড়া এলাকার যমুনা নদীর মোহনগঞ্জ,হুরা সাগরের চয়ড়া,নাম এলাকায় আগে থেকে বন্দবস্ত করা ছোট ছোট নৌকায় ড্রামে করে তেল চুরি হয়। মানিকগঞ্জ থেকে বাঘাবাড়ি পযন্ত অসংখ্য অস্থায়ী পয়েন্ট গড়ে তুলেছেন চক্র গুলো। লোক চক্ষুর আড়ালে চোরাই তেল পাচারে সক্রিয় একাধিক চক্র। এদের মধ্যে বেড়া থানা এলাকায় মমিনদের চক্র উল্লেখযোগ্য। মমিন গ্রুপের চক্রটি একক দাপটের সাথে এ ব্যাবসা করে আসছে। 


মমিন স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এ কাজে কেউ প্রতিবাদ করে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন,তৈল ব্যবসায়ি মমিন এর নেতৃত্বে এভাবে দিন দুপুরে সরকারি জাহাজ,সরকারি কাটার থেকে অবাধে তৈল অবৈধ ভাবে কেটে নিচ্ছে। জাহাজ থেকে তৈল কাটায় সহযোগিতা করেন দেশবন্ধু'র সকল স্টাফ ও জাহাজ মাষ্টারগন। এবং সরকারি নদী খনন এর কাটার থেকে তৈল কাটার সহযোগিতা করেন সরকারি কাটার এর স্টাফ ফারুক সহ আরও অনেকে। তাদের সহয়োগিতা নিয়ে এভাবে বিগত দুই বছর অবাধে ব্যবসা করছেন মমিন। তার নৌকার মাঝি হিসাবে কাজ করেন রুকল,রেন্টু এবং রুস্তম এ বিষয় টা প্রশাসন সহ বৃশালিখা গ্রাম ডাকবাংলোর এবং নদীর দুই পাড়ের সকলে জানেন। এমন আরও কয়েকজনের চোরাই তেল বিক্রি চক্র রয়েছে। এটা সরকারের দেশের ক্ষতি করছে বছরে প্রায় কয়েক কোটি টাকা। প্রশাসনের নজরদারিতে আরও ভয়ংকর তেল চুরির ঘটনা উঠে আসবে। আমরা চাই প্রশাসন সঠিকভাবে নজরদারি করুক।